মাদারীপুরে বেড়েছে অটোরিকশা ছিনতাই, বাধা দিলেই হত্যা


 মাদারীপুরে অটোরিকশা ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড: নিরাপত্তাহীনতায় চালকরা, প্রয়োজন পুলিশি টহল বৃদ্ধি




মাদারীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালকদের নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়েছে। ছিনতাইকারীদের একটি চক্র মাদকের টাকা জোগাড় করতে যাত্রীবেশে রিকশায় উঠে, সুবিধাজনক স্থানে গিয়ে চালককে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করে রিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। বাধা দিলে চালকদের হত্যা করতেও দ্বিধা করে না দুর্বৃত্তরা।




নিরাপত্তাহীনতায় চালকরা : 




গত ৬ জানুয়ারি শিবচরের পশ্চিম কাঁচিকাটা এলাকার মিজান কাজী রিকশা নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন মানিকপুরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। একইভাবে, ২০ জানুয়ারি নিখোঁজ হওয়া মুন্নার মরদেহ ২৮ জানুয়ারি মাদবরেরচরের রেললাইনের পাশে পাওয়া যায়।




স্থানীয় সূত্র জানায়, গত এক বছরে জেলার পাঁচটি থানায় ৩০টিরও বেশি অটোরিকশা ও ইজিবাইক চুরি হয়েছে। এছাড়া, চেতনানাশক প্রয়োগ করে একাধিক চালকের রিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বাধা দেওয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত তিনজন চালক।




চালকদের আতঙ্ক ও নিরাপত্তার দাবি : 




ইজিবাইক চালক রিপন মিয়া বলেন, "আমরা প্রতিনিয়ত ছিনতাইকারীদের আতঙ্কে থাকি। জানুয়ারিতে দুই চালককে হত্যা করে ইজিবাইক নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। নিরাপত্তার জন্য পুলিশি টহল বাড়ানো জরুরি।"




অটোরিকশা চালক রনি চোকদার বলেন, "কে যাত্রী আর কে ছিনতাইকারী, সেটা আমরা বুঝতে পারি না। বাধা দিলে খুন করে মরদেহ ফেলে রেখে যায়। চালকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।"




আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্যোগ : 




মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহ্ মোহাম্মদ সজীব জানান, আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আলোচনা করা হয়েছে। জেলা পুলিশ, র‌্যাবসহ সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশি টহলও বাড়ানো হচ্ছে।




মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেন, "শিবচরে পরপর দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তসহ কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।"




আইনজীবীদের মতামত : 




মাদারীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুব হোসেন শাকিল বলেন, "চালক হত্যা ও ছিনতাইয়ের ঘটনা আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি নির্দেশ করে। দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।"




আইনজীবী অ্যাডভোকেট লিয়াকত হোসেন বলেন, "পুলিশি টহল কমে যাওয়ায় অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। টহল বাড়ালে এমন অপরাধ কমবে।"




নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজন কার্যকর ব্যবস্থা : 




এ ধরনের অপরাধ বন্ধে পুলিশের কঠোর পদক্ষেপ, চালকদের সতর্কতা এবং স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা প্রয়োজন। পুলিশের টহল বাড়ানো হলে চালকরা নিরাপদে চলাচল করতে পারবেন, যা সামগ্রিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post