ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক নিহত: পরিবারে শোক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার পুটিয়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর গুলিতে আল আমিন (৩২) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের ২০৫০ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহত আল আমিন পুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুলতান মিয়ার ছেলে।
কীভাবে ঘটল এই ঘটনা?
নিহত আল আমিনের পরিবার জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় রশি দিয়ে গরু বাঁধার সময় একটি গরু সীমান্তের শূন্যরেখার ভারতীয় অংশে চলে যায়। সেটি ফেরত আনতে গেলে বিএসএফ সদস্যরা তাকে গুলি করে। আহত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে বিএসএফ তাকে নিয়ে যায় এবং ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পরিবারের প্রতিক্রিয়া :
আল আমিনের মৃত্যুর খবরে তার পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার মা নির্বাক, স্ত্রী তারিন আক্তার শোকে পাথর। মাত্র ছয় মাস আগে বিয়ে করা তারিন বর্তমানে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি বলেন, "আমার স্বামীকে বিনা কারণে হত্যা করা হলো, আমাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ কী হবে?"
বিজিবির পদক্ষেপ ও প্রশাসনের বক্তব্য :
বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) এই ঘটনায় বিএসএফকে লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে। ৬০ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউর রহমান জানান, বিএসএফ প্রথমে জানায় আল আমিন আহত হয়েছে, পরে শনিবার সকালে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। মরদেহ ফেরত পেতে পতাকা বৈঠকের জন্য বিজিবি বিএসএফকে চিঠি দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছামিউল ইসলাম বলেন, "বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মরদেহ ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে।"
ন্যায়বিচারের দাবি :
নিহত আল আমিনের পরিবার ও স্থানীয়রা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করেছেন। পাশাপাশি সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার এবং এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
এই ঘটনাটি বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে নতুন করে ভাবনার সুযোগ করে দিয়েছে। সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ এবং দুই দেশের সমন্বিত উদ্যোগই পারে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধ করতে।