নিখোঁজের দুই দিন পর ধনু নদে ভেসে উঠল তিনজনের মরদেহ

নেত্রকোনার হাওরে সংঘর্ষ: নিখোঁজের দুই দিন পর তিনজনের মরদেহ উদ্ধার নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার ধনু নদের বিভিন্ন স্থানে ভেসে ওঠা তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃতদের পরিচয় উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন— ✅ শহীদ মিয়া (৫৫) – রূপচন্দ্রপুর, আটপাড়া ✅ হৃদয় মিয়া (৩০) – রোয়াইলবাড়ী, কেন্দুয়া ✅ রোকন মিয়া (৫০) – বাগজান, মদন সংঘর্ষের পটভূমি : শনিবার (৮ মার্চ) হাওরের জলমহালে শতশত মাছ শিকারি মাছ ধরতে যান। নদী পারাপারের সময় নৌকার মাঝিদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে তাদের। এরপর থেকেই তিনজন নিখোঁজ ছিলেন। জানা গেছে, খালিয়াজুরীর জলমহালগুলোতে প্রভাবশালীরা ইজারা নিয়ে কোটি টাকার মাছের ব্যবসা করেন। ফলে সাধারণ জেলেরা উন্মুক্তভাবে মাছ ধরতে পারেন না। প্রতি বছর শুধুমাত্র একদিনের জন্য ‘পোলো বাওয়া উৎসবে’ মাছ ধরার সুযোগ পান স্থানীয়রা। সংঘর্ষের কারণ : - শনিবার কয়েকশ’ মাছ শিকারি খালিয়াজুরীর দিকে যাচ্ছিলেন। নৌকার মাঝিরা পারাপারে অস্বীকৃতি জানালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। একপর্যায়ে জলমহালের লোকজন ও গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে দুই পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন এবং তিনজন নিখোঁজ হয়ে যান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ : ✅ সংঘর্ষের পর ৫১ জনকে আটক করে পুলিশ। ✅ রবিবার (৯ মার্চ) স্থানীয় নেতাদের জিম্মায় আটকদের মুক্তি দেওয়া হয়। ✅ সোমবার (১০ মার্চ) সংঘর্ষ এড়াতে প্রশাসন ও যৌথবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মরদেহ উদ্ধারের বিবরণ : মদন উপজেলার রোকন মিয়ার মরদেহ রসুলপুর ঘাট থেকে উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। বাকি দুইজনের মরদেহ নাওটানা ঘাট থেকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য : মদন থানার ওসি নাঈম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, "মদনের একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, বাকি দুজনের ব্যাপারে তথ্য পেয়েছি। নিখোঁজের সংখ্যা নির্দিষ্টভাবে বলা কঠিন।" পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, "নৌকার মাঝি ও মাছ শিকারিদের সংঘর্ষে তিনজন নিখোঁজ হয়েছিলেন। তাদের মরদেহ ধনু নদীর বিভিন্ন স্থানে ভেসে উঠলে উদ্ধার করা হয়। সোমবার সকালে নতুন করে সংঘর্ষের চেষ্টা হলেও প্রশাসন তা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে।" • নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে জলমহাল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছে। স্থানীয় জেলে ও মাছ শিকারিদের অধিকার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

Post a Comment

Previous Post Next Post