রমজান মাসে নিত্যপণ্যের বাজারের চিত্র : সয়াবিন তেলের সংকট ও ক্রেতাদের আশঙ্কা।
রমজান মাস আসার সঙ্গে সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে কেনাকাটা বেড়ে গেছে। চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট, চকবাজার ও কর্ণফুলী কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা কেউ পুরো মাসের জন্য, কেউ আবার এক-দুই সপ্তাহের জন্য নিত্যপণ্য কিনছেন। সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছোলা, তেল, পেঁয়াজসহ অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের।
রমজানকে ঘিরে বাজার পরিস্থিতি :
বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও ক্রেতাদের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা কাজ করছে—রমজানে দাম বাড়বে কি না। তবে ব্যবসায়ীদের মতে, বোতলজাত সয়াবিন তেল ছাড়া অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম আপাতত নিম্নমুখী। সরবরাহ ঠিক থাকলে তেলের দামও নির্ধারিত মূল্যে চলে আসবে বলে মনে করছেন তারা।
সয়াবিন তেলের সংকট :
বাজারের বাস্তব চিত্র গত চার মাস ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। বাজারে গুটিকয়েক দোকানে এই তেল পাওয়া গেলেও লিটারপ্রতি দাম রাখা হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকা, যেখানে সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৭৫ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, কিছু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এমন প্রমাণও মিলেছে।
বাজারে খোলা তেলের দাম :
সরেজমিনে দেখা গেছে, বহদ্দারহাট বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। খোলা তেলের দামও ঊর্ধ্বমুখী। বর্তমানে—
পাম তেল: লিটারপ্রতি ১৫৫-১৬০ টাকা
সুপার পাম তেল: লিটারপ্রতি ১৭০-১৭৫ টাকা
ব্যবসায়ীরা জানান, সয়াবিনের সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ায় চাহিদার তুলনায় অনেক কম তেল পাওয়া যাচ্ছে। বহদ্দারহাটের দোকানি মুহাম্মদ ফরিদুল হক বলেন, ‘২০ কার্টন সয়াবিন তেলের অর্ডার করলেও পাচ্ছি মাত্র ২ কার্টন।’
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বক্তব্য :
চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ জানান, ‘আমরা বাজারে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি দোকানে সয়াবিন তেলের মজুত পেয়েছি। ফলে বোঝা যাচ্ছে, সংকট অনেকটাই কৃত্রিম।’
উপসংহার :
রমজান মাসকে কেন্দ্র করে বাজারে কেনাবেচা বাড়লেও অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট ও দাম বাড়ানোর প্রবণতা ভোক্তাদের দুশ্চিন্তায় ফেলছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে উদ্যোগ নেয়, তাহলে রমজানে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে বলে আশা করা যায়।